Select Page

জন্ডিস (Jaundice) বা কামলা কারণ, আপদকালিন চিকিৎসা ও পথ্যাপথ্য!

জন্ডিস (Jaundice) বা কামলা কারণ, আপদকালিন চিকিৎসা ও পথ্যাপথ্য!

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান মতে jaundice শব্দটি ফরাসি শব্দ Jaunisse, থেকে এসেছে যার অর্থ হলুদাভ । জন্ডিস ( Jaundice) যা ইক্টেরাস (Icterus) নামেও পরিচিত, আসলে কোন রোগ নয়, এটি রোগের লক্ষণ মাত্র । জন্ডিস হলে রক্তে বিলরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায় ফলে ত্বক,স্ক্লেরা বা চোখের সাদা অংশ ও অন্যন্য মিউকাস ঝিল্লি হলুদাভ হয়ে যায়।

সাধারণত রক্তে বিলিরুবিনের ঘনত্ব 1.2 mg/dL এর নিচে থাকে (25 µmol/L এর নিচে)। 3 mg/dL বা 50 µmol/L এর বেশি হলে জন্ডিস হয়।

 

Surgical Jaundice অথবা Obstructive Jaundice এ bile রস সঠিকভাবে প্রবাহিত হতে বাঁধাপ্রাপ্ত হয় এবং ফলশ্রুতিতে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়। পাথর, টিউমার, Pancreatic cancer bile duct সরু করে দেয় এই কারণে এই ধরণের চিকিৎসায় শল্য চিকিৎসা অতীব জরুরি (Surgery) ।

 

আয়ুর্বেদ মতে, পান্ডুরোগে (Anemia) আক্রান্ত ব্যক্তি যদি অধিক পরিমাণে পিত্তবর্ধক দ্রব্য (ঝাল জাতীয় খাবার, সূর্যের অত্যাধিক তাপ, গুরু আহার) সেবন করে, তাহাতে পিত্ত কুপিত হয়ে রক্ত ও মাংসকে দূষিত করিয়া কামলা (jaundice) রোগ উৎপন্ন করে। ইহাতে রোগীর চক্ষু, চর্ম, নখ ও মুখ অত্যন্ত হলুদবর্ণ হয় এবং মল ও মুত্র পীত বা রক্ত বর্ণের হয়।

 

  • জন্ডিসের লক্ষণ ও উপসর্গসমূহঃ

 

১) জন্ডিসের প্রধান লক্ষণ হল চোখ ও প্রসাবের রং হলুদ হয়ে যাওয়া আবার সমস্যা বেশি হলে পুরো শরীর গাঢ় হলুদবর্ণ ধারণ করতে পারে।

২) শারীরিক দুর্বলতা ও দেহের অবসন্নতা।

৩) ক্ষুধামন্দা ও ভুক্ত দ্রব্যের অপরিপাক।

৪) জ্বর জ্বর অনুভূতি কিংবা কাঁপানি দিয়ে জ্বর আসা।

৫) বমি বমি ভাব অথবা বমি,,মৃদু বা তীব্র পেট ব্যথা।

৬) অনেকসময় পায়খানা সাদা হয়ে যাওয়া।

 

  • জন্ডিসের নানাবিধ কারণঃ

 

১) রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে জন্ডিস দেখা দেয়।

২) সাধারণত লিভারের রোগই জন্ডিসের প্রধান কারণ । আমরা যা কিছু খাই তা লিভারেই প্রক্রিয়াজাত হয়। লিভার বিভিন্ন কারণে রোগাক্রান্ত হতে পারে।

৩) হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি এবং ই ভাইরাসগুলো লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করে যাকে বলা হয় ভাইরাল হেপাটাইটিস। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই জন্ডিসের প্রধান কারণ এই হেপাটাইটিস ভাইরাসগুলো।

৩) উন্নত দেশগুলোতে অতিরিক্ত মধ্যপান জন্ডিসের একটি অন্যতম প্রধান কারণ।

৪) অটোইমিউন লিভার ডিজিজ, বংশগত কারণসহ আরও নানান ধরনের লিভার রোগেও জন্ডিস হতে পারে।

৫) ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াতেও অনেক সময় জন্ডিস হয়।

৬) তাছাড়া থ্যালাসিমিয়া ও হিমোগ্লোবিন ই-ডিজিজের মত যেসকল রোগে রক্ত ভেঙ্গে যায় কিংবা পিত্তনালীর পাথর অথবা টিউমার হলে জন্ডিস হতে পারে। আবার লিভার বা অন্য কোথাও ক্যান্সার হলেও জন্ডিস হতে পারে।

 

আহার-বিহার  

শাইল চাউলের ভাত, গমের তৈরি খাদ্য, মুগ,মসূর, অরহর ডাল, পটোল, চালকুমড়া, কাঁচকলা, পালংশাক মেথীশাক, পুনর্নবাশাক, পেঁয়াজ, রসুন, হলুদ, তীতর পাখি, লাব পাখি, কবুতর,মোরগের মাংস, ডাব, আম, দাড়িম(ডালিম), পেঁপে, আঙ্গুর, খেজুর, ডুমুর পথ্য ।

 

যা খাওয়া যাবে নাঃ তৈল,ঘি,মাখন ও মসল্লাদি এবং পিত্তবর্ধক আহার, মদ, ইত্যাদি।

 

  • আয়ুর্বেদিক আপদকালীন চিকিৎসাঃ

 

১) নিম ও গুলঞ্চ এবং কাঁচা হলুদের রস ৩চা-চামচ পরিমাণ প্রত্যহ  সকাল ও সন্ধ্যায় সেব্য ।

২) কালোমেঘ , ধনে এবং আামলকী একত্রে ভিজানো জল প্রত্যহ সকাল ও সন্ধ্যায় সেব্য ।

 

তাছাড়া আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ১) আরোগ্য বর্ধন  ২) কালোমেঘাসব ৩) কামলান্তক  লৌহ উপরোক্ত ঔষধ সমূহ রোগ ও রোগীর অবস্থা বুঝে ক্ষেত্র বিশেষে ব্যবহার এ উত্তম ফল পাওয়া যায়।

Author 

SIRAJUM MUNIRA

Diploma in Ayurvedic Medicine and Surgery

TMSS Feroza Begum Unani and Ayurvedic Medical College and Hospital

About The Author

Sirajum monira

লেখিকার জন্ম ২০০০ সালের ২ জানুয়ারি বাংলাদেশের বগুড়া জেলার ধুনট অফিসার পাড়া জন্মগ্রহন করেন । তিনি শিক্ষাজীবনে মাধ্যমিক ধুনট এন ইউ পাইলট হাই স্কুল থেকে,এবং উচ্চ মাধ্যমিক ধুনট ডিগ্রি কলেজ থেকে ইন্টারমিডেট পাশ করেন। ২০১৬ সালে মাধ্যমিক শেষে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার পাশাপাশি Tmss Feroza Begum Unani and Ayurvedic Medical College and Hospital,, ৪বছর মেয়াদি DAMS ডিপ্লোমা কোর্স করেন (Diploma in Ayurvedic Medicine and Surgery).

Pin It on Pinterest

Share This

Share This

Share this post with your friends!