টনসিলাইটিস – TONSILITIS’র কারণ, লক্ষণ ও আপদকালীন স্ব-সহায়িকা!
টনসিলঃ জিভের পিছনে গলার দেয়ালের দু’পাশে গোলাকার পিণ্ডের মতো যে জিনিসটি দেখা যায়, সেটাই হল টনসিল। সর্দি-কাশির জন্য দায়ী ভাইরাসগুলির সংক্রামণেই টনসিলে ব্যথা বা সমস্যা দেখা দেয়। টনসিল হলো আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি অংশ এবং আমাদের মুখের ভেতরেই চারটি গ্রুপে তারা অবস্থান করে। এদের নাম লিঙ্গুয়াল, প্যালাটাইন, টিউবাল ও অ্যাডেনয়েড। এই টনসিলগুলোর কোনো একটির প্রদাহ হলেই তাকে বলে টনসিলাইটিস।
টনসিল রোগের কারণ:
১) পুষ্টির অভাব, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব।
২) আইসক্রিম, ফ্রিজে রাখা শীতল পানি বেশি পান করা টনসিলের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
৩) স্যাঁতসেঁতে স্থানে বাস করলে,
৪) আবহাওয়ার পরিবর্তনে শীতের প্রকোপ বেশি হলে,
৫) রোদ থেকে এসে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করলে, গরমে ঘাম বসে গেলে টনসিলের প্রদাহ বেড়ে যেতে পারে।
টনসিল রোগের লক্ষণঃ
১) তীব্র গলাব্যথা
২) মাথাব্যথা, উচ্চ তাপমাত্রা।
৩) খাবার খেতে কষ্ট ও মুখ হাঁ করতে অসুবিধা হয়।
৪) কানে ব্যথা হতে পারে।
৫) মুখ দিয়ে লালা বের হয় ও কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে যেতে পারে।
৬) মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে পারে।
৭) স্বরভঙ্গ, গলায় ঘাসহ টনসিল স্ফীতি, ঢোঁক গিলতে কষ্ট হয়, গলা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
ঘরোয়া চিকিৎসা (Home Remedy):
১) নুন জল: গলা ব্যথা শুরু হলে যে কাজটি কম-বেশি আমরা প্রায় সকলেই করে থাকি তা হল, সামান্য উষ্ণ জলে নুন দিয়ে গার্গেল করা। এটি টনসিলে সংক্রামণ রোধ করে ব্যথা কমাতে খুবই কার্যকরী। শুধু তাই নয়, উষ্ণ নুন জল দিয়ে গার্গেল করলে গলায় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রামণের আশঙ্কাও দূর করে দেয়।
২) হলুদ : এক কাপ গরম পানিতে এক আধা হলুদ মিশিয়ে নিন। এই পানি সামান্য গরম অবস্থায় ধীরে ধীরে খেলে উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া আধা থেকে এক ইঞ্চি হলুদ কাঁচা চিবিয়েও খাওয়া যায়। ৩ বেলা করে খেলে দ্রুত সমস্যার উপশম হয়। হলুদ অ্যান্টি ইনফ্লামেন্টরী, অ্যান্টি ব্যায়টিক এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি উপাদান যা গলা ব্যথা দূর করে টনসিলে সংক্রামণ কমাতে সাহায্য করে থাকে।
৩) আদা চা: দেড় কাপ জলতে ১/২ চামচ শুকনা আদার কুচি+ আধা চামচ হলুদ + কয়েকটা তেজপাতা দিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। দিনে অন্তত ৩-৪ বার এই পানীয়টি পান করুন। আদার অ্যান্টি ব্যকটেরিয়াল আর অ্যান্টি ইনফালামেন্টরী উপাদান সংক্রামণ ছাড়াতে বাধা দেয়। এর সঙ্গে সঙ্গে গলার ব্যথা কমিয়ে দিতেও এটি খুবই কার্যকরী।
৪ ) ঠান্ডা যেন না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। টনসিল হলে রুমাল বা কাপড় দিয়ে গলা পেচিয়ে রাখতে হবে। কোনভাবেই ঠাণ্ডা পানি সেবনীয় নয়।
“তাছাড়া” আয়ুরবেদের বিশেষঃ
১) নারদীয় মহালক্ষী বিলাস,সকাল ও সন্ধ্যায় পান +আদার রস সহসেব্য।
২) ১ চা চামচ ত্রিকটু চূর্ণ সকাল ও সন্ধ্যা মধু সহসেব্য।
৩) আয়ুর্বেদিক মসলা চা (যষ্টিমধু +ত্রিকটু+তেজপত্র +এলাচ+দারুচিনি) সকাল ও সন্ধ্যায় উষ্ণ গরম থাকতে সেব্য।সাদা চিনি সেবন নিষেধ লাল চিনি অথবা তালমিছরি খেতে হবে।
৪) তালিশাদি চূর্ণ সকল +চ্যাবন প্রাশ সকাল ও সন্ধ্যায় ১ চা চামচ করে সেব্য এছাড়াও অনেক ঔষধ রয়েছে চিকিৎসক এর পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করা উচিত।
Author
SIRAJUM MUNIRA
Diploma in Ayurvedic Medicine and Surgery
TMSS Feroza Begum Unani and Ayurvedic Medical College and Hospital