Select Page

Gastritis – মূল কারণ, প্রতিকার ও আয়ুর্বেদিক ঘরোয়া চিকিৎসা

Gastritis – মূল কারণ, প্রতিকার ও আয়ুর্বেদিক ঘরোয়া চিকিৎসা

Gastritis একটি বিস্তৃত পরিভাষা যা মূলত পাকস্থালির মধ্যে মিউকোস স্তরে (লাইনে) প্রদাহ বা জ্বালাপোড়াকে বোঝানো হয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটি আলসার (Ulcer) এর কারণও হয়। আয়ুর্বেদের ভাষায় এটিকে বলা হয় “উর্দ্ধভাগ অম্লপিত্তা”।

রোগ নির্ণয়ঃ

সাধারণত ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়ার পর ও মদ্যপান করলে পেটে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া  শুরু হয় এবং Antacid  জাতীয় মেডিসিন নিলে ব্যথার উপশম হয়। বেশিরভাগ সময় পাকস্থলীর উপরের দিকে ব্যথা হয়। এই ধরণের সমস্যা দেখা দিলে Gastritis (গ্যাস্ট্রাইটিস) হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যেসব কারণে গ্যাস্ট্রাইটিস হয়ঃ (নিদান)

  • Gastritis

    Cause of Gastritis

    আহারের কারণে বিষক্রিয়া (আমাদের শরীর যখন খাবার গ্রহণের প্রয়োজন অনুভব করে তখন আমাদের পাকস্থালিতে হাইড্রোক্লোরিক এসিড উৎপন্ন হওয়া শুরু হয় খাবার হজমের জন্য, সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ না করলে এই এসিড উপরে উঠে আসে সেই এসিডে পুড়ে আমাদের খাল্যনালী দগ্ধ হয় এবং সাথে সাথে পাকস্থালিতে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়).
  • মাত্রাতিরিক্ত ঝাল ও বাসি খাবার খেলে ।
  • ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (NSAIDs)
  • Bacterial Infection, H. Pyloric কে সাম্প্রতিক সময়ে Gastritis অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়।

পথ্যঃ (যা খাওয়া যাবে-যা খাওয়া যাবে না)

  • সব খাবারই পরিমিত পরিমানে খাওয়া যাবে তবে মরিচ, মশলা এবং টক জাতীয় খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
  • পরিমিত পরিমানে মসলা ব্যবহার এর সাথে সাথে রান্নার সময় অবশ্যই সরিষার তেল এর পরিবর্তে ঘি ব্যবহার করতে হবে ।
  • ভাজাপোড়া ও বাসি তেল দিয়ে রান্না করা খাবার হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যার সৃষ্টি করে। এই জাতীয় খাবার পরিহার করা আবশ্যক।
  • ছিল্কাযুক্ত সবুজ মুগ ডাল ও চাল দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি Gastritis এর সময়ে অন্যতম সেরা খাবার হিসেবে ধরা হয় যা আপনি খেতে পারবেন৷ এই ক্ষেত্রে ১ বছরের সংরক্ষণ করা চাল দিয়ে এ খাবার তৈরী করা অধিক উপকারী।  
  • দুধ সব সময়ই Gastritis Ulcer এর Pain relieve করা খাবার হিসেবে পরিচিত। এসব অবস্থায় সব সময় চা এবং কফি এর পরিবর্তে দুধ গ্রহণ করা অনেক কার্যকরী৷ দুধের পায়েস রান্না করে খাওয়াও বেশ উপকারি ।
  • চা, কফিতে এবং অনেক ধরণের কোমলপানীয়তে ক্যাফেইন থাকে সাথে চকলেট জাতীয় খাবার পাকস্থালির এসিডিটি বাড়ায়। এইসব জিনিস বর্জন করতে হবে তাহলেই Gastritis থেকে মুক্তি মিলবে৷
  • কিছু কিছু রোগীদের ক্ষেত্রে ফুড অ্যালার্জি অথবা অসহনীয়তা মূলত Gastritis এর কারণ হয়। এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে ডায়েট (খাবার) গ্রহণ করতে হবে।
  • Gastritis রোগীদের জন্য গাজর একটি ভাল খাবার যার বিটা ক্যারোটিন ভাল এন্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে।
  • তামাক জাতীয় খাদ্য, ধূমপান Mucous Membrane এবং Acid Secretion বাড়ায় । ধূমপান pyloric incompetence তৈরি করে  এবং পাকস্থলীতে duodenal Juice এর reflux বাড়ায় । তামাক ধোঁয়া পাকস্থালিতে আস্তরণের মতো সৃস্টি করে যা Gastritis উৎপাদনের অন্যতম কারণ৷

  • অ্যালকোহল Protective Prostaglandin (এটা এক ধরণের লিপিড স্তর যা পাকস্থলীর মিউকাস স্তর রক্ষা করে ) নিঃস্বরণে বাধা দেয়,  যা সাধারণত Gastritis উৎপাদন এর কারণ।
  • সাধারণত, মানসিক চিন্তারও Gastritis এর সাথে সমন্বয় রয়েছে। পরিবার ও কাজের জায়গায় বিষয়বস্তু নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা, মানসিক হতাশা, এবং ভিতরগত বিরক্তিভাব আপনাকে Gastritis এ আক্রান্ত হওয়ার পূর্ববতী অন্যতম কারণই না বরং এই সিম্পটম গুলো Gastritis এর চিরস্থায়ী কারণ।

আয়ুর্বেদিক ঘরোয়া চিকিৎসাঃ   

  • প্রকৃতিগতভাবে ‘যষ্টিমধু’ পাকস্থালির জ্বালা-পোড়া ও ক্ষত কমাতে সাহায্য করে এবং  H. Pyloric এর গ্রোথ বন্ধ করে দেয়। ১ চামচ যষ্টিমধু এর সাথে আধা চামচ ঘি ও ১ চামচ মধু মিক্স করে প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় (যখন পেট খালি অবস্থায় থাকে) তখন খেতে হবে। 
  • Asparagus racemosus (শতমূলী – এক ধরণের তাপনাশক ওষুধ) এটা অভ্যন্তরীণ তাপ কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, Hyperacidity এর জন্য এই গাছটির মূল খুবই কার্যকারী। এর মধ্যে তরল পদার্থ (যা Biochemically Human System জন্য গুরুত্বপূর্ণ) তার উপস্থিতি রয়েছে। এই পাউডারটি দিনে দুইবার ৩ থেকে ৬ গ্রাম হারে নেওয়া উচিত।। (যখন পেট খালি অবস্থায় থাকে)
  • আমলকী (Emblica officinalis) Dyspepsia (বদহজম), শরীর জ্বালা-পোড়া করা, anorexia (ওজন কমে যাওয়া), বমি এবং haemorrhage (Bleeding) এসব রোগের জন্য কার্যকরী। এই পাঊডার প্রতিদিন ২ চামচ করে খেতে হবে। (যখন পেট খালি অবস্থায় থাকে)

উল্লিখিত মেডিসিন কারা ব্যবহার করতে পারবে? শিশু, বয়স্ক , গর্ভবতী নারী ।

 

Writer

Md. Khairul Bashar (Naeeim)

Bachelor of Ayurvedic Medicine & Surgery (BAMS) Student, National Institute of Ayurveda (Deemed to be University), Jaipur, Rajasthan.  

About The Author

Md. Khairul Bashar Naeeim

লেখকের জন্ম ১৯৯৮ সালের ১১ই নভেম্বর বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলায়। প্রাথমিক শিক্ষা জীবনের হাতেখড়ি হয় তার মায়ের কাছে, এরপরে “বরগুনা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়” থেকে প্রাথমিক পর্যায়, গৌরীচন্না নওয়াব সলিমুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পর্ব ও উচ্চ মাধ্যমিকে “বরগুনা সরকারী কলেজ” থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। বর্তমানে তিঁনি ভারত সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত আইসিসিআর বৃত্তি লাভ করে ভারতের রাজস্থান রাজ্যের রাজধানী জয়পুরে "National Institute of Ayurveda (Deemed to be University)" এ Bachelor of Ayurvedic Medicine and Surgery বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করছেন।

Pin It on Pinterest

Share This

Share This

Share this post with your friends!