Select Page

নিদান বা রোগের মূল কারণ।

নিদান বা রোগের মূল কারণ।

নিদান শব্দের অর্থ রোগের কারণ। চিকিৎসক এর চিকিৎসা প্রদানের ক্ষেত্রে রোগের কারণ জানা আবশ্যক। কারণ রোগের কারণ বন্ধ করা গেলে শরীর নিজে নিজেই তার স্রষ্টা প্রদত্ত কলায় সুস্থ হয়ে যায়। আর রোগের কারণ বন্ধ না করা হলে সাময়িক সুস্থ হয়েও বার বার রোগী অসুস্থ হতে থাকে। তাই চিকিৎসায় নিদান ও প্রকার জানা অত্যাবশ্যক। খুব সংক্ষেপে নিদান ও প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করা হলো।

রোগের কারণঃ

১) নিজ (অভ্যন্তরীণ কারণ) – (Diet – lifestyle – emotional pattern factors)

যেমনঃ আমার বাবার ক্যান্সার আছে, আমার মায়ের ও ক্যান্সার আছে তাহলে আমার ও হতে পারে সে বিষয়ে চিন্তা থেকে ক্যান্সার রোগ হলে। অথবা প্রতিদিন তামসিক খাবার বা ফাস্ট ফুড খাওয়ার তাড়না থেকে রোগ সৃষ্টি হলে।

২) আগন্তুজ (বাহ্যিক কারণ) – রেডিয়েশন, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, প্যারাসাইট, ফুড পয়েজনিং, বিরুদ্ধ আহার, দুষিত বাতাস, ঋতুচক্র ইত্যাদি কারণে রোগ সৃষ্টি হলে।

বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয় যে নিজ দুর্বলতার কারণে (যেমন অগ্নির দূর্বলতা) আগন্তুজ ব্যধি হতে পারে, আবার আগন্তুজ এর শক্তি প্রবল হলে নিজ দুর্বল হতে পারে।

৩) সন্নিকর্ষ (নিকট কারণ) – immediate effect – যেমন খাবার খারাপ হওয়ার কারণে ডায়ারিয়া হওয়া।

৪) বিপ্রকর্ষ (দূর কারণ) – distal effect – এক গ্লাস মদ খেলে কোন সমস্যা হয় না তবে প্রতিদিন খেতে খেতে লিভার সিরোসিস হয়ে যায়।

৫) প্রধান কারণ (মুখ্য কারণ) – খাবার খাওয়ার পর বমি হলো। বমি হওয়ার পর একটা পোকা ও বের হলো। তাহলে ওই পোকা ই হলো বমির প্রধান কারণ যার থেকে ফুড পয়েজনিং হয়েছে।

৬) গৌন কারণঃ আগে কোন ব্যাক্তি নিয়মিত আইস্ক্রিম খাওয়ার কারণে দোষ প্রকোপিত হয়ে আছে, একদিন দিনের বেলা ঘুমানোর পর অগ্নিমন্দা হয়ে সে ব্যাক্তি অসুস্থ হয়ে গেছে, তবে আইসক্রীম ই হবে রোগের গৌন কারণ।

৭) ব্যাভিচারঃ (multiple small causes) যেমন কেঊ শশা খেল, তারপর আইসক্রিম খেলে, তারপর ঠান্ডা পানিতে গোসল করলো তারপর তার ঠান্ডা লাগল, একটা রোগের একাধিক ছোট ছোট কারণ।

৮) অনুবন্ধা কারণঃ একটা রোগ আরেকটা রোগের সৃষ্টি করলো। যেমন ঠান্ডা লাগা থেকে ব্রংকাইটিস হওয়া।

৯) কর্মজ কারণঃ কেউ কোন পাপ কাজ করলো এবং তার ফল ভোগের জন্য রোগাক্রান্ত হওয়া হলো কর্মজ কারণ।

১০) প্রজনপরধা (intellectual blasphemy) (শরীরের বুদ্ধিমত্তার কথা না শোনা) যেমন অক্লান্ত পরিশ্রম করার পর শরীর চায় বিশ্রাম নিতে, বিশ্রাম না নিয়ে কাজ করে গেলে শরীর অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। অথবা একটা দড়িকে দেখে সাপ মনে হলো এবং ভয়ে শরীর অসুস্হ হলো ইত্যাদি।

১২) পঞ্চ ইন্দিয়ের অতিরিক্ত ব্যবহার, অব্যবহার ও মিথ্যাব্যবহার। যেমন অধিক আলোর দিকে তাকিয়ে থাকা, অল্প আলো পড়াশোনা করা, খারাপ জিনিসের দিকে তাকিয়ে থাকা দর্শন ইন্দ্রিয়ের ভুল ব্যবহার। এমনিভাবে কান, জিহবা, ত্বক, নাক এর মিথ্যা ব্যবহার, অব্যাবহার ও অতিরিক্ত ব্যবহার রোগের অন্যতম কারণ।

১৩) পরিনামঃ যা প্রকৃতিগত কারণ যেমন বয়স বেশি হয়ে যাওয়া, ঋতগত পরিবর্তণ ইত্যাদির কারণে ব্যাধিগ্রস্ত হয়ে যাওয়া।

১৪) ব্যাবসাহিক বা পেশাগত কারণঃ যেমন যারা পেইন্ট কোম্পানিতে কাজ করে তাদের লেড পয়োজনিং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে ইত্যাদি।

১৫) ঔষধজ ব্যাধিঃ ভুল ঔষধ সেবনে রোগীর এক রোগ থেকে অন্যকোন রোগ হলে।

About The Author

Devojyoti Dutta

লেখকের জন্ম ১৯৯৩ সালের ১০ ই জুন বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহন করেন । তিনি শিক্ষাজীবনে মাধ্যমিক কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে, এবং উচ্চ মাধ্যমিক কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োটেকনোলোজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক পাশ করেন ২০১৬ সালে। তিনি পড়াশোনা শেষ করে ESCO.Singapore এ চাকরি সুবাদে দেশ বিদেশ বিভিন্ন জায়গা ঘুরে প্রকৃতি নিয়ে জ্ঞান অর্জন করেন। তিনি ২০১৮ সালে ভারত সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত আইসিসিআর বৃত্তি লাভ করে ভারতের রাজস্থান রাজ্যের রাজধানী জয়পুরে "National Institute of Ayurveda (Deemed to be University)" এ Bachelor of Ayurvedic Medicine and Surgery বিষয়ে পড়াশুনা করছেন।

Pin It on Pinterest

Share This

Share This

Share this post with your friends!